জুলীয়াস চৌধুরী
ভারতের সাথে বাংলাদেশের প্রথম লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ২০১০ সালে, যা ছিল উভয় দেশের উন্নয়ন সহযোগিতার এক নতুন অধ্যায়। এই ঋণের পরিমাণ ছিল ১.৩৪ বিলিয়ন ডলার, যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এখনো ছাড় হয়নি। এদিকে, প্রকল্পগুলো এখনো অসম্পূর্ণ থাকা সত্ত্বেও, বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই কিস্তি পরিশোধ শুরু করেছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে বিভিন্ন ধরণের জটিলতা ও বিলম্ব থাকলেও কেন ঋণ পরিশোধের কাজ অব্যাহত রয়েছে— এ প্রশ্ন আজ প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।
২০১০ সালের মার্চে ভারতের সাথে প্রথম লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) চুক্তির পর ৭৭০ মিলিয়ন ডলার ঋণ ছাড় হয়েছে, কিন্তু পুরো ১.৩৪ বিলিয়ন ডলারের এক-তৃতীয়াংশ এখনও অমুক্ত রয়েছে। পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশ কিস্তি পরিশোধ শুরু করেছে, যদিও প্রথম এলওসির অধীনে থাকা ১৫টি প্রকল্পের মধ্যে ২টি প্রকল্প এখনো অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে।
অমুক্ত অর্থের পরিমাণ এবং প্রকল্প বাস্তবায়নের ধীর গতির কারণে কবে নাগাদ বাকি অর্থ ছাড় হবে তা নিশ্চিত নয়। তবে ঋণ পরিশোধের শেষ তারিখে কোনো অনিশ্চয়তা নেই। ২০৩২ সালের ২৮ মার্চের মধ্যে এই ঋণ বাংলাদেশকে পরিশোধ করতে হবে। চুক্তি অনুযায়ী, ৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ২০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ এই ঋণ পরিশোধ করবে। প্রথম অর্থ ছাড় হয় ২০১২ সালের ২৯ মার্চ, অর্থাৎ, বাকী ৩৬৪ মিলিয়ন ডলার আজও ছাড় হলেও বাংলাদেশ এই অর্থ পরিশোধের জন্য সময় পাবে মাত্র ৮ বছর।
প্রকল্প বাস্তবায়নে জটিলতার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন কারণ তুলে ধরেছেন। বিশেষ করে, ভারতীয় কর্তৃপক্ষের দীর্ঘ সম্মতির প্রক্রিয়া এবং ভারতীয় ঠিকাদারদের কাজে অনিয়ম প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব সৃষ্টি করেছে। খুলনা-দর্শনা রেললাইন ও আশুগঞ্জ কনটেইনার বন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে সময়মতো অগ্রগতি হয়নি, ফলে অর্থছাড়ও আটকে আছে। এমনকি, কিছু প্রকল্প বাদ পড়েছে এলওসি তালিকা থেকে, আর কিছু প্রকল্পের প্রস্তাব (ডিপিপি) এখনো প্রস্তুত হয়নি।
এছাড়া, এলওসি চুক্তির শর্তানুযায়ী দরপত্র প্রক্রিয়ায় শুধুমাত্র ভারতীয় ঠিকাদারদের অংশগ্রহণের বাধ্যবাধকতা এবং প্রকল্পের ৭৫% পণ্য ভারত থেকে ক্রয় করার নিয়ম প্রকল্প বাস্তবায়নে বিশেষ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) এসব সমস্যার সমাধানে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সাথে একাধিকবার আলোচনা করেছে। ইআরডি কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন, একক প্রকল্প ভিত্তিতে ঋণ চুক্তি হলে, অর্থ ছাড়ের প্রক্রিয়া দ্রুত হবে এবং ঋণ পরিশোধের সময়সীমাও বৃদ্ধি পেতে পারে। এছাড়া, ভারতের সাথে নিয়মিত দ্বিপাক্ষিক আলোচনা জোরদার করতে হবে, যাতে ঋণ প্রদানে কোনো ধরণের বিলম্ব না ঘটে।
বিশেষজ্ঞরা যেমন বিআইডিএস-এর সাবেক মহাপরিচালক মুস্তফা কে মুজেরী মনে করেন, অর্থছাড়ের বিলম্ব ও প্রকল্পের ধীর অগ্রগতির প্রেক্ষিতে ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানো অত্যাবশ্যক। ভারতের পক্ষ থেকে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং প্রকল্পগুলোকে পুনরায় মূল্যায়নের জন্য শীর্ষ পর্যায়ের আলোচনা আরও বেশি প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
ভারতীয় এলওসি’র আওতায় নেয়া প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। অর্থছাড়ে বিলম্ব, প্রকল্প বাস্তবায়নের ধীর গতি, এবং ঋণ শর্তাবলী বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় উচ্চ পর্যায়ের কার্যকর আলোচনা এবং ঋণের শর্ত পুনর্মূল্যায়ন একান্ত প্রয়োজন। অন্যথায়, বাংলাদেশ এই ঋণের সমাপ্তি না ঘটিয়েই বিশাল অর্থনৈতিক চাপে পড়বে, যা দেশের সার্বিক উন্নয়ন কার্যক্রমকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
ভারতের সাথে বাংলাদেশের প্রথম লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ২০১০ সালে, যা ছিল উভয় দেশের উন্নয়ন সহযোগিতার এক নতুন অধ্যায়। এই ঋণের পরিমাণ ছিল ১.৩৪ বিলিয়ন ডলার, যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এখনো ছাড় হয়নি। এদিকে, প্রকল্পগুলো এখনো অসম্পূর্ণ থাকা সত্ত্বেও, বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই কিস্তি পরিশোধ শুরু করেছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে বিভিন্ন ধরণের জটিলতা ও বিলম্ব থাকলেও কেন ঋণ পরিশোধের কাজ অব্যাহত রয়েছে— এ প্রশ্ন আজ প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।
২০১০ সালের মার্চে ভারতের সাথে প্রথম লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) চুক্তির পর ৭৭০ মিলিয়ন ডলার ঋণ ছাড় হয়েছে, কিন্তু পুরো ১.৩৪ বিলিয়ন ডলারের এক-তৃতীয়াংশ এখনও অমুক্ত রয়েছে। পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশ কিস্তি পরিশোধ শুরু করেছে, যদিও প্রথম এলওসির অধীনে থাকা ১৫টি প্রকল্পের মধ্যে ২টি প্রকল্প এখনো অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে।
অমুক্ত অর্থের পরিমাণ এবং প্রকল্প বাস্তবায়নের ধীর গতির কারণে কবে নাগাদ বাকি অর্থ ছাড় হবে তা নিশ্চিত নয়। তবে ঋণ পরিশোধের শেষ তারিখে কোনো অনিশ্চয়তা নেই। ২০৩২ সালের ২৮ মার্চের মধ্যে এই ঋণ বাংলাদেশকে পরিশোধ করতে হবে। চুক্তি অনুযায়ী, ৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ২০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ এই ঋণ পরিশোধ করবে। প্রথম অর্থ ছাড় হয় ২০১২ সালের ২৯ মার্চ, অর্থাৎ, বাকী ৩৬৪ মিলিয়ন ডলার আজও ছাড় হলেও বাংলাদেশ এই অর্থ পরিশোধের জন্য সময় পাবে মাত্র ৮ বছর।
প্রকল্প বাস্তবায়নে জটিলতার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন কারণ তুলে ধরেছেন। বিশেষ করে, ভারতীয় কর্তৃপক্ষের দীর্ঘ সম্মতির প্রক্রিয়া এবং ভারতীয় ঠিকাদারদের কাজে অনিয়ম প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব সৃষ্টি করেছে। খুলনা-দর্শনা রেললাইন ও আশুগঞ্জ কনটেইনার বন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে সময়মতো অগ্রগতি হয়নি, ফলে অর্থছাড়ও আটকে আছে। এমনকি, কিছু প্রকল্প বাদ পড়েছে এলওসি তালিকা থেকে, আর কিছু প্রকল্পের প্রস্তাব (ডিপিপি) এখনো প্রস্তুত হয়নি।
এছাড়া, এলওসি চুক্তির শর্তানুযায়ী দরপত্র প্রক্রিয়ায় শুধুমাত্র ভারতীয় ঠিকাদারদের অংশগ্রহণের বাধ্যবাধকতা এবং প্রকল্পের ৭৫% পণ্য ভারত থেকে ক্রয় করার নিয়ম প্রকল্প বাস্তবায়নে বিশেষ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) এসব সমস্যার সমাধানে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সাথে একাধিকবার আলোচনা করেছে। ইআরডি কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন, একক প্রকল্প ভিত্তিতে ঋণ চুক্তি হলে, অর্থ ছাড়ের প্রক্রিয়া দ্রুত হবে এবং ঋণ পরিশোধের সময়সীমাও বৃদ্ধি পেতে পারে। এছাড়া, ভারতের সাথে নিয়মিত দ্বিপাক্ষিক আলোচনা জোরদার করতে হবে, যাতে ঋণ প্রদানে কোনো ধরণের বিলম্ব না ঘটে।
বিশেষজ্ঞরা যেমন বিআইডিএস-এর সাবেক মহাপরিচালক মুস্তফা কে মুজেরী মনে করেন, অর্থছাড়ের বিলম্ব ও প্রকল্পের ধীর অগ্রগতির প্রেক্ষিতে ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানো অত্যাবশ্যক। ভারতের পক্ষ থেকে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং প্রকল্পগুলোকে পুনরায় মূল্যায়নের জন্য শীর্ষ পর্যায়ের আলোচনা আরও বেশি প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
ভারতীয় এলওসি’র আওতায় নেয়া প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। অর্থছাড়ে বিলম্ব, প্রকল্প বাস্তবায়নের ধীর গতি, এবং ঋণ শর্তাবলী বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় উচ্চ পর্যায়ের কার্যকর আলোচনা এবং ঋণের শর্ত পুনর্মূল্যায়ন একান্ত প্রয়োজন। অন্যথায়, বাংলাদেশ এই ঋণের সমাপ্তি না ঘটিয়েই বিশাল অর্থনৈতিক চাপে পড়বে, যা দেশের সার্বিক উন্নয়ন কার্যক্রমকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
মন্তব্য করুন: