বিশেষ প্রতিনিধি
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন অন্তর্বর্তী সরকার দেশের বিভিন্ন খাতে সংস্কারের পদক্ষেপ নিচ্ছে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার, অর্থাৎ দ্রব্যমূল্য কমিয়ে জনসাধারণকে স্বস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে সাফল্য অনেকটাই অনুপস্থিত। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে, যার ফলে সাধারণ মানুষ অর্থনৈতিক চাপে জর্জরিত। বাজার বিশ্লেষকরা সতর্ক করছেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে দেশের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির ওপর চাপ ক্রমেই বাড়তে থাকবে।
দুই মাস আগে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর, সাধারণ মানুষ দ্রব্যমূল্য কমানোর আশায় ছিল। কিন্তু টিসিবি (ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ) এর তথ্য অনুযায়ী, ছয়টি প্রধান নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে, যেখানে কমেছে মাত্র দুটি পণ্যের দাম। বিশেষ করে সবজি, ডিম, মাছ এবং মুরগির দাম বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। ডিমের প্রতি ডজনের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭০ টাকা, যা স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য বাড়তি চাপ তৈরি করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সুদের হারে নিয়ন্ত্রণ তুলে বাজারে মুদ্রা সরবরাহ কমানোর কৌশল নিয়েছে। এতে মুদ্রাস্ফীতি কিছুটা কমলেও নিত্যপণ্যের বাজারে তেমন প্রভাব পড়েনি। ডলারের দাম স্থিতিশীল হলেও পণ্যের ব্যবসায়ীদের উৎপাদন খরচ কমেনি, যার ফলে পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুদের হার বাড়ানোর উদ্যোগ সামগ্রিকভাবে ঠিক আছে, তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের জন্য আরও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
বিশেষ করে ডিমের ক্ষেত্রে সরবরাহ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। কারণ, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ার পরও এই পণ্যের চাহিদা থাকে অপরিবর্তিত।
সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, পূর্ববর্তী সরকারগুলোর মতো নতুন সরকারও নিত্যপণ্যের বাজারে কার্যকর সংস্কার করতে ব্যর্থ হচ্ছে। শহর ও গ্রামের মানুষ উচ্চ দ্রব্যমূল্যে বিরক্ত। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যথাযথ নজর দিতে পারছে না, এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় নতুন পরিকল্পনার প্রয়োজন।
টিসিবির তালিকা অনুযায়ী, ব্রয়লার মুরগি, সয়াবিন তেল, পাম তেল, এবং চিনির দাম বেড়েছে, যেখানে পেঁয়াজ এবং আলুর দাম সামান্য কমেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পণ্যের বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে শুল্ক কমিয়ে আমদানির ব্যবস্থা বাড়ানো জরুরি। কিন্তু অন্যান্য খাতে দৃশ্যমান কোনো সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।
সাধারণ মানুষের বাজারের অভিজ্ঞতা ভয়াবহ। মিরপুর-১১ এর এক ব্যবসায়ী জানান, "সবজির দাম শুনে ক্রেতারা হতাশ। আমাদেরও লাভ কমছে।" ক্রেতারা বলেন, "বাজারে কোনো জিনিসের দাম নিয়ন্ত্রণে নেই। প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়ছে।" ব্যবসায়ীদের মতে, দাম বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ সরবরাহ ঘাটতি এবং ব্যবসায়িক পরিবহনে উচ্চ খরচ।
বাজারে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সরকারিভাবে সরবরাহ চেইন তদারকি করতে হবে। বর্তমানে কিছু বড় ব্যবসায়ী পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে, যার ফলে প্রতিযোগিতার অভাব তৈরি হচ্ছে এবং দাম বেড়ে যাচ্ছে। ডিজেলের শুল্ক কমিয়ে পরিবহন খরচ কমানো এবং পোলট্রি খাদ্য আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক ছাড় দেওয়া গেলে পণ্যের দাম কিছুটা কমানো সম্ভব।
নাগরিক সমাজের গবেষণা পরিচালক সাবা মুরতাজ বলেন, নতুন সরকারের কাছে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা অনেক। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে, দ্রব্যমূল্য কমিয়ে জনসাধারণকে স্বস্তি দেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না বললেই চলে। বাজারে তদারকি বৃদ্ধি, সরবরাহ চেইন সংস্কার, এবং শুল্ক নীতিতে ছাড় দেওয়ার মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হতে পারে। তা না হলে, দেশের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির ওপর চাপ আরও বাড়বে, যা সামাজিক অসন্তোষের জন্ম দিতে পারে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন অন্তর্বর্তী সরকার দেশের বিভিন্ন খাতে সংস্কারের পদক্ষেপ নিচ্ছে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার, অর্থাৎ দ্রব্যমূল্য কমিয়ে জনসাধারণকে স্বস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে সাফল্য অনেকটাই অনুপস্থিত। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে, যার ফলে সাধারণ মানুষ অর্থনৈতিক চাপে জর্জরিত। বাজার বিশ্লেষকরা সতর্ক করছেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে দেশের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির ওপর চাপ ক্রমেই বাড়তে থাকবে।
দুই মাস আগে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর, সাধারণ মানুষ দ্রব্যমূল্য কমানোর আশায় ছিল। কিন্তু টিসিবি (ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ) এর তথ্য অনুযায়ী, ছয়টি প্রধান নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে, যেখানে কমেছে মাত্র দুটি পণ্যের দাম। বিশেষ করে সবজি, ডিম, মাছ এবং মুরগির দাম বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। ডিমের প্রতি ডজনের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭০ টাকা, যা স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য বাড়তি চাপ তৈরি করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সুদের হারে নিয়ন্ত্রণ তুলে বাজারে মুদ্রা সরবরাহ কমানোর কৌশল নিয়েছে। এতে মুদ্রাস্ফীতি কিছুটা কমলেও নিত্যপণ্যের বাজারে তেমন প্রভাব পড়েনি। ডলারের দাম স্থিতিশীল হলেও পণ্যের ব্যবসায়ীদের উৎপাদন খরচ কমেনি, যার ফলে পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুদের হার বাড়ানোর উদ্যোগ সামগ্রিকভাবে ঠিক আছে, তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের জন্য আরও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
বিশেষ করে ডিমের ক্ষেত্রে সরবরাহ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। কারণ, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ার পরও এই পণ্যের চাহিদা থাকে অপরিবর্তিত।
সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, পূর্ববর্তী সরকারগুলোর মতো নতুন সরকারও নিত্যপণ্যের বাজারে কার্যকর সংস্কার করতে ব্যর্থ হচ্ছে। শহর ও গ্রামের মানুষ উচ্চ দ্রব্যমূল্যে বিরক্ত। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যথাযথ নজর দিতে পারছে না, এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় নতুন পরিকল্পনার প্রয়োজন।
টিসিবির তালিকা অনুযায়ী, ব্রয়লার মুরগি, সয়াবিন তেল, পাম তেল, এবং চিনির দাম বেড়েছে, যেখানে পেঁয়াজ এবং আলুর দাম সামান্য কমেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পণ্যের বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে শুল্ক কমিয়ে আমদানির ব্যবস্থা বাড়ানো জরুরি। কিন্তু অন্যান্য খাতে দৃশ্যমান কোনো সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।
সাধারণ মানুষের বাজারের অভিজ্ঞতা ভয়াবহ। মিরপুর-১১ এর এক ব্যবসায়ী জানান, "সবজির দাম শুনে ক্রেতারা হতাশ। আমাদেরও লাভ কমছে।" ক্রেতারা বলেন, "বাজারে কোনো জিনিসের দাম নিয়ন্ত্রণে নেই। প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়ছে।" ব্যবসায়ীদের মতে, দাম বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ সরবরাহ ঘাটতি এবং ব্যবসায়িক পরিবহনে উচ্চ খরচ।
বাজারে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সরকারিভাবে সরবরাহ চেইন তদারকি করতে হবে। বর্তমানে কিছু বড় ব্যবসায়ী পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে, যার ফলে প্রতিযোগিতার অভাব তৈরি হচ্ছে এবং দাম বেড়ে যাচ্ছে। ডিজেলের শুল্ক কমিয়ে পরিবহন খরচ কমানো এবং পোলট্রি খাদ্য আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক ছাড় দেওয়া গেলে পণ্যের দাম কিছুটা কমানো সম্ভব।
নাগরিক সমাজের গবেষণা পরিচালক সাবা মুরতাজ বলেন, নতুন সরকারের কাছে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা অনেক। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে, দ্রব্যমূল্য কমিয়ে জনসাধারণকে স্বস্তি দেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না বললেই চলে। বাজারে তদারকি বৃদ্ধি, সরবরাহ চেইন সংস্কার, এবং শুল্ক নীতিতে ছাড় দেওয়ার মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হতে পারে। তা না হলে, দেশের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির ওপর চাপ আরও বাড়বে, যা সামাজিক অসন্তোষের জন্ম দিতে পারে।
মন্তব্য করুন: