করেসপন্ডেন্ট, গাজীপুর
গাজীপুরে এশিয়ান টিভির সাংবাদিক আরিফ খান আবিরের উপর গত মঙ্গলবার বিকালে প্রকাশ্যে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় রাতেই শ্রীপুরে থানায় মামলা দায়ের করেছেন আহত ওই সাংবাদিক। কিন্তু গত তিন দিনেও এখনো হামলাকারীদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
এ হামলার ঘটনায় গাজীপুরের বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন ও সিনিয়র সাংবাদিকগণ নিন্দা জ্ঞাপন করেন। তারা দায়ীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবী জানান।
থানায় দায়ের করা মামলায় প্রধান অভিযুক্ত হলো,জজ মিয়া। তিনি গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নগর হাওলা গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে। তার নেতৃত্বে অজ্ঞাত ৬ জন একযোগে ধাড়ালো অস্ত্র নিয়ে আবিরের উপর নৃশংস হামলায় অংশ নেয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়,বিবাদীগণ দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন বিষয়াদী নিয়ে ঐ সাংবাদিকের সাথে বিরোধ সৃষ্টি করে আসছে। তার ও পরিবারের লোকজনকে রাস্তাঘাটে মারধরসহ খুন জখমের ভয়-ভীতি ও হুমকি দিচ্ছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার দিন পেশাগত কাজ শেষে নিজের মোটরসাইকেল যোগে বাড়ী ফেরার পথে বিবাদীগণ পূর্ব শত্রুতার আক্রোশে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ধারালো রাম দা, লাঠি, লোহার রড ইত্যাদি দেশীয় মারাত্মক অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তার গতিরোধ করে। পরে খুন জখমের উদ্দেশ্যে এলোপাথারীভাবে কিল, ঘুষি, কোড কাজ করা লাথি মারিয়া ও লাঠি, লোহার রড দিয়া আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করিয়া নীলাফুলা তীব্র ব্যাথাযুক্ত জখম করিয়া মাটিতে ফেলে দেয়। পরে ধারালো রাম দা দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথার বাম পার্শ্বে স্ব-জোরে কোপ দিয়ে কাটা রক্তাক্ত গুরুতর জখম করে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মাথায় আঘাত করলে ডান হাত দিয়ে ফিরাইলে ডান হাতের কব্জায় লাগিয়া হাড় ভাঙ্গা গুরুত্বর জখম হয়। বুকের উপর বসে গলায় চেপে শ্বাসরোধ করত: হত্যার চেষ্টা করলে গলার নিচে ফুলা জখম করে। এসময় আমার আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন দৌড়াইয়া আসলে বিবাদীগণ মটর সাইকেল ভাংচুর করে ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে এবং খুন জখমের হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নিয়ে যায়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অবস্থা গুরুত্বর থাকায় শহীদ তাজ উদ্দিন আহমেদ/ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
স্বজনেরা জানান, হামলায় আরিফ খান আবিরের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গভীর ক্ষত হয়েছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মাথার সিটি স্ক্যানসহ বিভিন্ন পরীক্ষা করতে বৃহস্পতিবার ঢাকায় নেয়া হেয়েছে।
হামলার পর মঙ্গলবার রাতেই আহত অবস্থায় আবির নিজে বাদী হয়ে জজ মিয়াসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে শ্রীপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়ের হওয়ার পর থেকে অভিযুক্তরা গা ঢাকা দেয়ায় তাদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা মামলা নিয়েছি। এটি আরিফ খান আবিরের মামাতো ভাইয়ের সাথে ঘটনা। বিবাদীর ভাইয়ের সাথে গরু নিয়ে ঝামেলা আছে। এ নিয়ে তর্কবিতর্ক করছে তারা। তদন্ত চলছে। হাসপাতাল থেকে আমরা সার্টিফিকেট পাব। সার্টিফিকেটে লেখা থাকবে, কি ধরণের-গুরুতর না সিম্পলি, সে অনুযায়ী আমাদের ধারা বসে। তদন্ত কর্মকর্তা সেটা তদন্ত করবে। তদন্তে যেটা পাবে, সেটার ব্যবস্থা আমরা একশতে একশ ব্যবস্থা নিব।
গাজীপুর পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম বলেন, বিষয়টি আমার নজরে আছে। ঘটনার পরেই মামলা নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত আসামিদের ধরতে থানা পুলিশ যাতে আরো বেশী তৎপর হয় সে বিষয়ে তদারক করা হবে।
মন্তব্য করুন: