
করেসপন্ডেন্ট, গাজীপুর
পুলিশ পরিচয়ে এটিএম বুথ থেকে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের মূলহোতা রুবেলসহ তার চার সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি)। সোমবার (১০ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টায় সালনা ওভারব্রিজের নিচ থেকে রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার মোল্ল্যা নজরুল ইসলাম তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতাররা হলো টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ফটিয়ামারী গ্রামের মৃত তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে রুবেল রানা (২৬), ঝিনাইদহের হরিনাকুণ্ডু উপজেলার শোড়াতলা গ্রামের জব্বার মালিথার ছেলে তুষার ইসলাম (৩৭), বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার অশোকসেন গ্রামের জাহাঙ্গীর মোল্লার ছেলে সবুজ মোল্লা (৩৪) এবং পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার দিগলগ্রাম গ্রামের জহিরুল হকের ছেলে খায়রুল ইসলাম (৩১)। আসামিরা গাজীপুর ও সাভারের আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া থেকে এসব অপকর্ম করে বেড়াতো বলে জানান পুলিশ কমিশনার।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) সহকারী কমিশনার (মিডিয়া) আবু সায়েম নয়ন বলেন, সদর থানা পুলিশ গোপন সংবাদে জানতে পারে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সালনা ওভারব্রিজের নিচে ভুয়া পুলিশ অবস্থান করছে। পরে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে ওভারব্রিজের নিচে মহাসড়কের পশ্চিম পাশের এলাকা চারদিকে ঘিরে ফেলা হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দৌঁড়ে পালানোর সময় রুবেলকে আটক করা হয়। তার দেহ তল্লাশি করে প্যান্টে ঝোলানো অবস্থায় পুলিশের ভুয়া পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড), একটি কালো রঙয়ের ওয়াকিটকি, দুটি আলাদা কালো অ্যান্টিনা, বিভিন্ন ব্যাংকের ছয়টি এটিএম কার্ড, বিভিন্ন কোম্পানির সাতটি সিম, একটি আইফোন-১৩, পুলিশের ইউনিফর্ম পরিহিত পাসপোর্ট সাইজের ছবি, বাংলাদেশ পুলিশ লেখা নীল রঙয়ের নোটবুক উদ্ধার হয়। পরে তার ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে পুলিশের একটি বেল্ট, একটি খেলনা পিস্তল ও কভার, একটি কম্পিউটার, আরিফ হাসান নামে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের দুটি জাল সার্টিফিকেট (দাখিল ও আলিম) উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানিয়েছে যেসব পোশাক কারখানার শ্রমিকদের এটিএম কার্ডের মাধ্যমে বেতন হয়, সেসব এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে তারা ভুয়া পুলিশ পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন এটিএম বুথের সামনে অবস্থান নিতো। শ্রমিকেরা এটিএম বুথের সামনে এসে বেতন উত্তোলন করতে চাইলে পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাদের সহায়তার কথা বলে এটিএম কার্ড ও পাসওয়ার্ড দিয়ে নিতো তারা। পরে তারা অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিতো। কেউ প্রতিবাদ জানালে তাকে ভয়ভীতি দেখাতো।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, চক্রের মূলহোতা রুবেল রানা পুলিশ পরিচয় দিয়ে চারটি বিয়ে করেছেন। এছাড়া চক্রের সদস্যরা পুলিশের পোশাক পরিহিত ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিয়ে মেয়েদের সঙ্গে বিয়ের কথা বলে সম্পর্ক গড়ে তুলতো। পরে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করতো। এসব ঘটনায় ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন: