![](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjXMuO9zg6-ox_3t5Z9Iv9u1zodb0DDhQO-WN5kaPJFRTzHkQP--DZvDeVcU2eT3yQw0tXEDYWdtIXgY__gO5hgLJiNlCVVM-0u_cK0hLpN7eHhfRl5DDQy4-SKse2mLB2D6KSHrDJ49ZhwecjMSLzIB-1xx_TF3t4UIqVjPRfIof6t3QZrChQRycbG/s16000/gazipur-02.jpg)
রাহিম সরকার, গাজীপুর
ঢাকা থেকে গাজীপুর যেতে মানুষের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। প্রতিদিন এই সড়ক পাড়ি দিতে দুই থেকে পাঁচ ঘণ্টার মতো সময় লাগে। তবে শিগগিরই এই দুর্ভোগের শেষ হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, আমি জানি গাজীপুর থেকে ঢাকা পর্যন্ত অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। এই পথে যাতায়াতে দুই থেকে পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগছে। তবে আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, বাস র্যাপিড ট্রানজিটের (বিআরটি) ৭৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বিআরটি’র নিচ দিয়ে চলাচলে আর দুর্ভোগ হওয়ার সুযোগ নেই। আমরা খুব কাছাকাছি এসে গেছি, কাজ সমাপ্তের পথে। আপনারা ৩০ মিনিটে গাজীপুর থেকে ঢাকা চলে আসবেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ মে) গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে নিজ বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার সততার সোনালী সকাল এই পদ্মা সেতু। বাংলাদেশের সামর্থ্যরে স্মারক এই পদ্মা সেতু। আজ পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। শতভাগ সততার সাথে পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।এজন্য বিএনপি নানা অপবাদ দিচ্ছে। যারা দুর্নীতির অপবাদ দেন তাদের বিশ্ব ব্যাংকের বক্তব্যের দিকে নজর দিতে হবে। বিশ্ব অবশেষে স্বীকার করেছে, তারা পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে সরে গিয়ে ভুল করেছে। পদ্মা সেতু হয়ে গোলো। মানুষ খুশি। দেশের মানুষ ভালো আছে। কিন্তু ফখরুল সাহেবের মন খারাপ। দেশের মানুষ ভালো থাকলে বিএনপির সকলের মন খারাপ হয়, বিশেষ করে বিএনপির নেতা কর্মীদের।
গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আ.ক.ম. মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজ এমপি’র পরিচালনায় সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন কৃষিমন্ত্রী ড: আব্দুর রাজ্জাক, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, আওয়ামী লীগের সাংগঠণিক সম্পাদক মীর্জা আজম এমপি, আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, সিমিন হোসেন রিমি এমপি, শামসুন্নাহার ভূঁইয়া এমপি, আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, কেন্দ্রীয় সদস্য আনোয়ার হোসেন, মো. সাহাবুদ্দিন ফরাজী, ইকবাল হোসেন অপু এমপি, মোহাম্মদ সাইদ খোকন, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান, ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গাজীপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক আখতার উজ্জামান, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ মন্ডল প্রমূখ। কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় অসংখ্য নেতা-কর্মী সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি’র উদ্দেশ্যে সেতুমন্ত্রী বলেন, গত ১৩ বছরের আন্দোলনে তারা ব্যর্থ, তাদের আন্দোলন হবে আর কোন বছর? তারা নির্বাচনে ব্যর্থ, এখন পদ্মা সেতু দেখে বিএনপি’র গাত্রদাহ হয়েছে। আজকে বিআরটি প্রকল্প হয়ে যাচ্ছে, মেট্রোরেল হয়ে যাচ্ছে, কর্ণফুলী টানেল হয়ে যাচ্ছে। সামনে ভোট বিএনপির মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ বিরোধীদের মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। আজকে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব সারা দুনিয়ায় হয়েছে। জিনিস পত্রের দাম ফুয়েলের ওপর, জালানীর ওপর সারা দুনিয়ায় এর প্রভাব পড়েছে। বাংলাদেশ কোনো বিচ্ছন্ন দ্বীপ নয়। এ দেশেও তার প্রভাব পড়েছে। এ নিয়েও তারা ফায়দা লুটতে চচ্ছে।
সেতু মন্ত্রী নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, সম্মেলনে আমি দেখতে পাচ্ছি হাজার হাজার মানুষ ঐক্যবদ্ধ এবং তারা দলে দলে এই সম্মেলনে এসেছে। আপনারা আজ এই সম্মেলন থেকে শপথ নিন। সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে আপনাদেরকে শুধু বলব ঐক্যবদ্ধ থাকতে। সকলে অন্তর্কলহ বিরোধ মিটিয়ে ফেলুন।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে, আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র চলছে এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে ইনশাল্লাহ ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ নিয়ে আগামী নির্বাচনে আমরা বিজয়ের বন্দরে পৌঁছাবো। সেতু মন্ত্রী বিগত উপজেলা পরিষদসহ অন্যান্য নির্বাচনে যারা নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ছিলেন তাদের বাদ দিয়ে তৃণমুল নেতা কর্মীদের নিয়ে কমিটি গঠনের জন্য উপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতাদের আহ্বান জানান।
১৯ বছর পরে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে গাজীপুরের ভাওয়াল রাজবাড়ি মাঠে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে এ সম্মেলন উদ্বোধন করেন কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।
এর আগে গাড়ি বোঝাই করে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও এলাকা থেকে বাদ্য বাজিয়ে প্রিয় নেতাদের ছবিযুক্ত ব্যানার ও পোস্টার বহন করে দলের নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে সম্মেলনস্থলে পৌঁছেন। মুহুর্তে গাজীপুর নগরী লোকারণ্য হয়ে যায় এবং মিছিলে মিছিলে এলাকা প্রকম্পিত হয়ে উঠে। দুপুর হওয়ার আগেই সম্মেলনস্থল মানুষে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।
মন্তব্য করুন: