ছবি: সংগৃহীত |
অনলাইন ডেস্ক
জুলাই থেকে অক্টোবর মাস ইলিশের ভরা মৌসুম। যা রপ্তানি হয় ভারতে, যায় ‘উপহার’ হিসেবেও। তবে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর পাল্টে গেছে সেই চিত্র।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ায় ইলিশসহ বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অন্যান্য মাছের দাম বেড়েছে ভারতের বাজারে। এছাড়া ‘অবৈধ পথে’ যাওয়া এসব মাছ বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট, ২০২৪) এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘কলকাতার জনপ্রিয় মাছের বাজারগুলো চলতি বর্ষায় ‘বেস্ট সেলার’ পদ্মা নদীর ইলিশের সংকটে পড়েছে। ইলিশ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ। তবে মাছটি সীমান্তের অপর পাশে পশ্চিমবঙ্গ এবং ভারতের উত্তর-পূর্ব অংশের মানুষের কাছেও বেশ জনপ্রিয়।’
এনডিটিভি বলছে, ‘বাংলাদেশ থেকে আমদানি হওয়া ইলিশের সিংহভাগই যায় পশ্চিমবঙ্গে। দুর্গাপূজা ঘিরে সুস্বাদু এই মাছের চাহিদা আরও বেড়ে যায়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কিছু দেশে ইলিশ পাওয়া গেলেও, বাংলাদেশের ইলিশের স্বাদ অতুলনীয়।’
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ‘ইলিশ কূটনীতি’র অংশ হিসেবে আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ভারতে বার্ষিক ইলিশ রফতানি সুবিধা দিতেন। ২০১২ সাল থেকে অন্যান্য দেশে রফতানি বন্ধ থাকলেও ভারতে মাছ বিক্রির অনুমতি দিতো শেখ হাসিনা সরকার।’
প্রতিবেদন মতে, ‘পশ্চিমবঙ্গের পরে ইলিশ সরবরাহের এই সংকটে সবচেয়ে বেশি সমস্যার মুখে পড়েছে ত্রিপুরা। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এই রাজ্যটি পদ্মার ইলিশের অন্যতম বড় ক্রেতা। তাপস সরকার নামে আগরতলার এক মাছ বিক্রেতা বলেন, ‘সরবরাহ কমে গেছে, তাই আমাদের দাম বাড়াতে হবে।’
শঙ্কর পাল নামে কলকাতার এক মাছ ব্যবসায়ী বলেন, ‘বাংলাদেশি ইলিশের সরবরাহে আকস্মিক পতন ঘটেছে, তাই দাম বাড়বে। আমরা এখন এক কেজির ইলিশ ১৮০০ রুপিতে বিক্রি করছি, যা অবৈধভাবে আসছে।’
বাংলাদেশে ছাত্র বিক্ষোভের জেরে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরপর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখনও স্থিতিশীল না হওয়ায় ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
এর আগে গত রবিবার (১১ আগস্ট, ২০২৪) সচিবালয়ে নিজ দফতরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেশবাসী ইলিশ পাবে না, আর বিদেশে রপ্তানি হবে, এটা হতে পারে না। আগে দেশকে গুরুত্ব দিতে হবে। এরপর রপ্তানি করা হবে।’
দেশে ইলিশ মাছের দাম বেশি হলেও তা রপ্তানি করা হচ্ছে। ইলিশ রপ্তানি বন্ধ করা হবে কি না- সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে ফরিদা আখতার বলেন, ‘দেশের মানুষ যাতে ইলিশ মাছ পায় এবং দাম কমে, সেই উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
মন্তব্য করুন: