
করেসপন্ডেন্ট, গাজীপুর
গাজীপুরের শ্রীপুরে লিচু গাছে ঝুলন্ত বালু ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে খবরটি নিশ্চিত করেছে র্যাব।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বেড়াইদের চালা গ্রামের ছিদ্দিক গাজীর ছেলে আবুল কাশেম গাজী (৩৩), একই এলাকার ইদ্রিস আলীর ছেলে ফখরুল ইসলাম (৫০) ও ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার চাকুয়া গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে ফালান (৪০)। তাদের কাছ থেকে তিনটি মোবাইল ফোন ও নগদ ৫ হাজার ৬১০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
র্যাব-১, পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের (স্পেশালাইজড কোম্পানি) কোম্পানি কমান্ডার মেজর এএসএম মাঈদুল ইসলাম জানান, গত ৩০ সেপ্টেম্বর শ্রীপুরের টেপিরবাড়ি গ্রামের মৃধাবাড়ী এলাকায় ইসমাইল মৃধার বাড়ির দক্ষিণ পাশে লিচু গাছের ডালে রক্তাক্ত জখম ঝুলন্ত অবস্থায় অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির (৪০) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরবর্তীতে প্রযুক্তির সহায়তায় লাশটি বালু ব্যবসায়ী ময়মনসিংহ জেলা সদরের চর লক্ষ্মীপুর গ্রামের ইসলাম উদ্দিনের ছেলে এনামুল হকের বলে শনাক্ত করা হয়। এ ব্যাপারে শ্রীপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এ ঘটনায় র্যাব আলাদা ছায়া তদন্ত শুরু করে।
এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার সকাল থেকে শুরু হওয়া অভিযানে ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর থানা এলাকা থেকে আবুল কাশেম গাজীকে গ্রেফতার করা হয়। পরে একই জেলার পাগলা থানার দত্তের বাজারঘাট পাগলীরচর এলাকায় বালুর ট্রলার থেকে ফালান ও শ্রীপুরের বেড়াইদের চালা থেকে ফখরুলকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আবুল কাশেম গাজী ফালানকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ভিকটিম এনামুল হক একজন বালু ব্যবসায়ী। গত ২৯ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টার দিকে এনামুল হক অভিযুক্ত ফখরুল ইসলামের কাছ থেকে বালু বিক্রির টাকা নেওয়ার জন্য তার বাড়িতে গেলে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এ সময় ফখরুল তাকে মারধর করেন। ভিকটিম (এনামুল হক) মার খেয়ে পালিয়ে স্থানীয় খোরশেদ আলমের দোকানের সামনে গেলে আবুল কাশেম গাজী ও ফালান তাকে আটকিয়ে তার কাছে থাকা নগদ ৫ হাজার ৮শ’ টাকা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেন। পরে ভিকটিমকে ধরে নিয়ে পুনরায় ফখরুল ইসলামের কাছে নিয়ে যান। সেখানে তাদের মারধরে ভিকটিম এনামুল হকের মৃত্যু হয়। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে ভিকটিমকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়ার কথা বলে অজ্ঞাত পিকআপে তুলে অভিযুক্তরা ভিকটিমের লাশ ধামাচাপা দেওয়ার জন্য শ্রীপুরের টেপিরবাড়ী এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে স্থানীয় ইসমাইল মৃধার বাড়ীর দক্ষিণ পাশে লিচু গাছের ডালের সাথে ফাঁস লাগা অবস্থায় ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যান তারা। অভিযানে আবুল কাশেম গাজীর বাড়ি থেকে ভিকটিম এনামুলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে।
মন্তব্য করুন: