করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা
ছোট উদ্যোক্তাদের তথা কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (সিএমএসএমই) জন্য ২৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন (পুনঃঅর্থায়ন স্কিম) করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই স্কিমের আওতায় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিজস্ব শাখা, উপশাখা, এজেন্ট ব্যাংকিং, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করতে পারবে।
মঙ্গলবার (১৯ জুলাই, ২০২২) এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়— দেশের কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প বা সিএমএসএমই খাতে নিয়োজিত উদ্যোক্তাদের মাঝে সহজ শর্তে অর্থপ্রাপ্তির সুযোগ তৈরি করা সম্ভব হলে তা জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনকে অধিকতর গতিশীল করবে। সে লক্ষ্যে, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে সিএমএসএমই উদ্যোক্তাদের অপেক্ষাকৃত স্বল্প সুদে,মুনাফায় ও সহজ শর্তে ঋণ বা বিনিয়োগ সুবিধা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন করেছে।
স্কিমের নাম: ‘সিএমএসএমই খাতে মেয়াদি ঋণের বিপরীতে পুনঃঅর্থায়ন স্কিম’ নামে অভিহিত হবে। তহবিলের উৎস: বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব তহবিল।
তহবিলের পরিমাণ ও মেয়াদ: ২৫ হাজার কোটি টাকা, যা আবর্তনশীল হিসেবে পরিচালিত হবে। প্রয়োজনে তহবিলের পরিমাণ বৃদ্ধি করা হবে। প্রাথমিকভাবে স্কিমটির মেয়াদ হবে তিন বছর।
কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদেরকে মেয়াদি ঋণ এ স্কিমের আওতায় পুনঃঅর্থায়ন প্রাপ্তির জন্য যোগ্য মর্মে বিবেচিত হবে। বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তা, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন উদ্যোক্তা এবং যেকোনও দুর্যোগে (যেমন- নদীভাঙন, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, খরা, মঙ্গা, অগ্নিকাণ্ড, ভূমিকম্প, ভবন ধস, কোভিড-১৯ এর ন্যায় অতিমারি ইত্যাদি) ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তারা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ স্কিমের আওতায় পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পাবেন।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এ স্কিমের আওতায় বিতরণকৃত মোট ঋণের ন্যূনতম ৭৫ শতাংশ কুটির, মাইক্রো ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের মাঝে সামগ্রিকভাবে বিতরণ করতে হবে এবং সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ মাঝারি উদ্যোক্তাদের মাঝে বিতরণ করা যাবে।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এ স্কিমের আওতায় বিতরণকৃত মোট ঋণের ন্যূনতম ৭০ শতাংশ উৎপাদন ও সেবা খাতে এবং সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ ব্যবসা খাতে দেওয়া যাবে।
খেলাপি ঋণগ্রহীতারা এ স্কিমের আওতায় পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা প্রাপ্য হবেন না। ঋণ গ্রহীতার ঋণের শ্রেণিকরণ বিষয়ে সিআইবি হতে নিশ্চিত হতে হবে।
সুদের হার: অর্থায়নকারী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুকূলে এ স্কিমের আওতায় পুনঃঅর্থায়িত অর্থের বিপরীতে বার্ষিক সুদের হার হবে ২ শতাংশ।
গ্রাহক পর্যায়ে সুদের হার: এ স্কিমের আওতায় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহক পর্যায়ে আরোপিত বার্ষিক সুদের হার হবে সর্বোচ্চ ৭ সাত শতাংশ।
এ স্কিমের আওতায় প্রদত্ত ঋণের ক্ষেত্রে গ্রাহক পর্যায়ে গ্রেস পিরিয়ড হবে সর্বোচ্চ ৬ মাস। শিল্প/সেবা/ব্যবসার ধরন ভেদে ঋণের মেয়াদ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নির্ধারিত হবে। তবে গ্রেস পিরিয়ডসহ ঋণের মেয়াদ ৫ বছরের বেশি হবে না। পুনঃঅর্থায়নের মেয়াদ ঋণের মেয়াদের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নির্ধারণ করা হবে।
পুনঃঅর্থায়ন গ্রহণের যোগ্যতা
এই স্কিমের আওতায় তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অবস্থিত এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস ডিপার্টমেন্টের পরিচালক (এসএমইএসপিডি) এর সঙ্গে একটি অংশগ্রহণ চুক্তি সম্পাদন করতে হবে। সব রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংক এই পুনঃঅর্থায়ন সুবিধার আওতায় ঋণ দিতে পারবে।
মন্তব্য করুন: