কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো |
ডেইলি নিউজ ডেস্ক
কানাডায় বন্দুকের মালিকানা বন্ধ করতে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে দেশটির সরকার। স্থানীয় সময় সোমবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ঘোষণা দিয়েছেন, এ-সংক্রান্ত আইন পাসের জন্য পার্লামেন্টে একটি বিল উত্থাপন করা হবে। প্রস্তাবিত আইনের আওতায় কার্যকরভাবে বন্দুক আমদানি ও বিক্রি নিষিদ্ধ হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের একটি স্কুলে বন্দুকধারীর হামলায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ ২১ জনের হতাহতের পর এ ঘোষণা দিল কানাডা সরকার। খবর এএফপির।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রুডো বলেন, ‘জাতীয়ভাবে বন্দুকের মালিকানা নিষিদ্ধ করতে আমরা একটি আইন প্রণয়ন করতে যাচ্ছি।’
বন্দুক সহিংসতার শিকার হওয়া ব্যক্তির পরিবার ও স্বজনেরা ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। ট্রুডো বলেন, ‘এই আইন কার্যকর হলে কানাডার কোনো জায়গায় আর বন্দুক কেনা, বেচা, স্থানান্তর কিংবা আমদানি সম্ভব হবে না। অন্যভাবে বললে, আমরা বন্দুকের বাজার বন্ধ করে দিচ্ছি।’
প্রস্তাবিত বিলটিকে আইনে পরিণত করতে পার্লামেন্টে পাস হতে হবে এটি।
২০২০ সালের এপ্রিলে কানাডার নোভা স্কটিয়া এলাকায় বন্দুকধারীর হামলায় ২৩ জন নিহত হয়। এর কয়েক দিন পরই ১ হাজার ৫০০ ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র নিষিদ্ধ করে দেশটির সরকার।
সোমবার ট্রুডো স্বীকার করেছেন যে বন্দুক সহিংসতার ঘটনা ক্রমাগত বেড়েই যাচ্ছে। ট্রুডো আরও বলেছেন, ‘জনগণ যেন নির্ভয়ে ও অবাধে সুপারমার্কেট, স্কুল ও উপাসনালয়ে যেতে পারে। বন্দুকের গুলি নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে তারা যেন পার্কে যেতে পারে, জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যেতে পারে।
বন্দুক সহিংসতা একটি জটিল সমস্যা। তবে দিন শেষে অঙ্কটা খুবই সরল। আমাদের কমিউনিটিতে যত কমসংখ্যক বন্দুক থাকবে, সবাই তত বেশি নিরাপদ থাকবে।’
কানাডা সরকারের পরিসংখ্যান সংস্থা গত সপ্তাহে বলেছে, দেশটিতে যত সহিংস অপরাধের ঘটনা ঘটে, তার প্রায় তিন শতাংশই আগ্নেয়াস্ত্র-সংশ্লিষ্ট সহিংস অপরাধের ঘটনা।
তবে ২০০৯ সাল থেকে কারও দিকে বন্দুক তাক করার মাথাপিছু হার প্রায় তিন গুণ হয়েছে। একই সময়ে কাউকে হত্যা কিংবা আহত করার ইচ্ছা থেকে গুলি ছোড়ার হার পাঁচ গুণ বেড়েছে।
কানাডার শহর এলাকাগুলোতে যেসব বন্দুক সহিংসতা ঘটে, তার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশের ক্ষেত্রে হ্যান্ডগান বা হাতে নিয়ন্ত্রিত বন্দুক ব্যবহার করা হয়।
কানাডার পুলিশ দাবি করে থাকে, দেশটিতে বন্দুক চোরাচালানের মূল উৎস যুক্তরাষ্ট্র। কানাডার জননিরাপত্তা-বিষয়ক মন্ত্রী মারকো মেন্দিচিনোর হিসাব অনুসারে তাঁর দেশে প্রায় ১০ লাখ হ্যান্ডগান আছে। এক দশক আগের তুলনায় এ সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
মন্তব্য করুন: