আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের নাবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে ফ্লোরিডায় গেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। কানাডিয়ান পণ্যের ওপর ট্রাম্পের ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি প্রতিরোধ করার চেষ্টায় তার এ সাক্ষাৎ বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমগুলো।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় পাম বিচ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছেন এবং ট্রাম্পের মার-এ-লাগো এস্টেটে গিয়েছেন ট্রুডো। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
গত সপ্তাহে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, জানুয়ারিতে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর মেক্সিকো ও কানাডা থেকে আমদানি হওয়া সব পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করবেন তিনি। এরপর ফোনে এই দুই নেতার মধ্যে কথা হয়। প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর কার্যালয় বা ট্রাম্পের দল কেউই এই সফর সম্পর্কে মন্তব্য করেনি।
শুক্রবার ট্রুডোর প্রকাশিত কর্মসূচিতেও এই সফরের কোনও উল্লেখ ছিল না। সূত্র জানিয়েছে, দুই নেতা একসঙ্গে রাতের খাবার খাবেন।
ট্রুডো বলেছেন, প্রথম মেয়াদে ট্রাম্পের সঙ্গে সফলভাবে একটি প্রধান বাণিজ্য চুক্তি পুনরায় আলোচনা করতে পেরেছিল কানাডা। যদিও দুই নেতার সম্পর্ক মাঝে মাঝেই উত্তপ্ত হয়েছিল।
শুক্রবার প্রিন্স এডওয়ার্ড আইল্যান্ডে এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার সময় ট্রুডো বলেন, আমরা দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করে উভয় সীমান্তে কর্মসংস্থান তৈরি করতে পেরেছি। ট্রাম্পের সঙ্গে অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনার প্রত্যাশা করছেন তিনি।
ট্রুডো আরও বলেন, তার লক্ষ্য হবে ট্রাম্পকে এটা বোঝানো যে এই শুল্ক কেবল কানাডিয়ানদের ক্ষতি করবে না। বরং এটি আমেরিকানদের জন্যও মূল্য বৃদ্ধি করবে এবং মার্কিন অর্থনীতির ক্ষতি করবে।
ট্রাম্পের সাথে ফোন কলের পর, ট্রুডো বুধবার কানাডার প্রদেশ ও অঞ্চলের নেতাদের সাথে একটি জরুরি বৈঠক করেন। কীভাবে মার্কিন-কানাডা সম্পর্ক পরিচালনা করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করেন নেতারা।
কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদারদের একটি এবং দেশটির মোট রপ্তানির প্রায় ৭৫ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রে যায়।
শুল্ক এড়ানোর চেষ্টা হিসেবে ট্রুডোর ফ্লোরিডা সফরটি কানাডার সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে মনে করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলেছেন, ট্রাম্প প্রায়ই কৌশলগতভাবে এমন হুমকিগুলো দেন, যা আলোচনার লক্ষ্য অর্জনে ব্যবহৃত হয়। তাই শুল্ক বাস্তবায়ন করা হবে কিনা তা এখনও অস্পষ্ট।
মেক্সিকোর বিরুদ্ধেও একই শুল্ক হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। ইঙ্গিত দিয়েছেন, উভয় দেশ তাদের মার্কিন সীমান্ত সুরক্ষিত না করা পর্যন্ত শুল্ক কার্যকর থাকবে। মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবামও এই সপ্তাহে ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন।
মার্কিন বর্ডার পেট্রোলের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা সীমান্তে অনুপ্রবেশের সংখ্যা দক্ষিণ সীমান্তের তুলনায় কম। ২০২৪ অর্থবছরে উত্তর সীমান্তে প্রায় ২৩ হাজার ৭০০ জনকে আটক করা হয়েছে। আর দক্ষিণ সীমান্তে ১৫ লাখ ৩০ হাজারের বেশি আটক হয়েছে।
তবে কানাডিয়ান কর্মকর্তারা সাম্প্রতিক দিনগুলোতে বলেছেন, সীমান্ত নিরাপত্তা উন্নত করতে এখনও যৌথভাবে কাজ করার প্রয়োজন রয়েছে।
মন্তব্য করুন: