করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা
বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সংঘর্ষে ব্যাপক প্রাণহানির জন্য মূলত সরকারই দায়ী বলে মনে করেন দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা। তারা বলেন, সরকারকে ভয় দেখানোর সংস্কৃতি থেকে সরে আসতে হবে। গুলি করে আন্দোলন দমনের অসুস্থ মানসিকতা এখনই বন্ধ করতে হবে। স্বাধীন দেশে মানুষ মুক্ত পরিবেশে বাস করবে; বদ্ধ, নিয়ন্ত্রিত এবং আতঙ্কের পরিবেশে নয়।
আজ মঙ্গলবার (৩০ জুলাই, ২০২৪) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘হত্যা, অবৈধ আটক ও নির্যাতনের বিচার চাই’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের এমন মনোভাব তুলে ধরেন বিশিষ্ট নাগরিকেরা। ‘বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজ’–এর ব্যানারে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
লিখিত বক্তব্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ছাত্র–জনতাকে হত্যা, জুলুম ও নির্যাতনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। একই সঙ্গে এমন গুমোট ও সংকটময় পরিস্থিতিতে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ এবং সামগ্রিকভাবে শিক্ষাঙ্গনকে নিরাপদ ও শিক্ষামুখী রাখতে ১১ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে পুলিশ, র্যাবসহ সরকারি বাহিনী এবং সরকারি মদদপুষ্ট অস্ত্রধারীদের গুলি ও নির্মম আঘাতে প্রতিটি মৃত্যুর সঠিক, স্বচ্ছ তদন্ত করা এবং প্রকৃত দোষী যত উচ্চ পদাধিকারী বা যে দলমতের হোক না কেন, তার সর্বোচ্চ আইনানুগ শাস্তি নিশ্চিত করা।
এসময় টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, মানবাধিকারকর্মী শিরীন হক, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন ও আসিফ নজরুল। আরও ছিলেন বেসরকারি সংস্থা এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা উপস্থিত ছিলেন।
বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজের ১১ দফা দাবি:
১. কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশ, র্যাব, আনসার, বিজিবি, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ সরকারি মদদপুষ্ট অস্ত্রধারীদের গুলি এবং নির্মম আঘাতে নিহত সকল মৃত্যুর সঠিক, স্বচ্ছ তদন্ত হতে হবে এবং প্রকৃত দোষী, তা সে যতই উচ্চ পদাধিকারী বা কোন দলমতের হোক, সর্বোচ্চ আইনানুগ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
২. স্বাধীন, গ্রহণযোগ্য এবং বস্তুনিষ্ঠতার স্বার্থে প্রতিটি হতাহতের এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অস্ত্রের ব্যবহার ও বল প্রয়োগের বিষয়ে জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে তদন্ত হতে হবে। এই প্রক্রিয়া দ্রুততম সময়ের মধ্যে শুরু করতে হবে।
৩. ইতোমধ্যে সংগৃহীত ছবি, ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে চিহ্নিত সকল হন্তারক ও আক্রমণকারীকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। এই ব্যাপারে কালবিলম্বের কোনও সুযোগ নেই।
৪. জাতির ইতিহাসে সংঘটিত এমন নজিরবিহীন হতাহতের শিকার সকল নিহত, আহত নাগরিকের পূর্ণাঙ্গ তালিকা সরকারকে অবিলম্বে প্রকাশ করতে হবে।
৫. ১৪৭ জন নয়, সকল নিহত ও আহত নাগরিকের সম্মানে জাতির সহানুভূতি, সম্মান আর শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযথ মর্যাদায় শোক ঘোষণা করতে হবে। এই শোক প্রকাশকে আক্রমণকারীদের গ্রেপ্তারের দৃশ্যমান প্রক্রিয়া শুরু করে আন্তরিক ও অর্থবহ করতে হবে।
৬. দায় মেনে নিয়ে প্রত্যেক নিহতের পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে। আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে। কেবল প্রতিশ্রুতি নয়, ক্ষতিপূরণ আর পুনর্বাসনের পুরো পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের চিত্র জাতির সামনে অনতিবিলম্বে তুলে ধরতে হবে।
৭. অবিলম্বে আটককৃত সকল শিক্ষার্থীর মুক্তি দিতে হবে এবং শিক্ষার্থী গ্রেপ্তারের চলমান প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে এবং সেখানে অস্ত্রধারী ও প্রভাব বিস্তারের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে।
৮. তথাকথিত ডিবি হেফাজত থেকে সকল সমন্বয়কারী মুক্তি দিতে হবে। এমন জোরপূর্বক উঠিয়ে নেওয়া আর বেআইনি হেফাজতের ব্যাখ্যা দিতে হবে এবং এর সাথে জড়িত সকলকে জবাবদিহিতার মুখোমুখি করতে হবে।
৯. সরকারকে ভয় দেখানোর সংস্কৃতি থেকে সরে আসতে হবে। গুলি করে আন্দোলন দমনের অসুস্থ মানসিকতার অবসান এখনি করতে হবে। স্বাভাবিক ও স্বস্তির পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। কারফিউ ও সেনা প্রত্যাহার করতে হবে, সাঁজোয়া যান সরিয়ে নিতে হবে, হেলিকপ্টারের পাহারা থামাতে হবে, ব্লক রেইড, গণগ্রেফতার, ছাত্র-অভিভাবক হয়রানি বন্ধ করতে হবে। আমরা স্বাধীন দেশে মুক্ত পরিবেশে বসবাস করবো, কোন বদ্ধ, নিয়ন্ত্রিত, আতঙ্কের পরিবেশে নয়।
১০. অবাধ তথ্য প্রবাহে আরোপিত সকল বাধা দূর করতে হবে। ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পূর্ণ মাত্রায় খুলে দিতে হবে।
১১. সহিংসতা দমনের নামে বিরোধী মত দমন করা যাবে না। স্পষ্ট প্রমাণের মাধ্যমে সহিংসতার প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সংঘর্ষে ব্যাপক প্রাণহানির জন্য মূলত সরকারই দায়ী বলে মনে করেন দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা। তারা বলেন, সরকারকে ভয় দেখানোর সংস্কৃতি থেকে সরে আসতে হবে। গুলি করে আন্দোলন দমনের অসুস্থ মানসিকতা এখনই বন্ধ করতে হবে। স্বাধীন দেশে মানুষ মুক্ত পরিবেশে বাস করবে; বদ্ধ, নিয়ন্ত্রিত এবং আতঙ্কের পরিবেশে নয়।
আজ মঙ্গলবার (৩০ জুলাই, ২০২৪) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘হত্যা, অবৈধ আটক ও নির্যাতনের বিচার চাই’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের এমন মনোভাব তুলে ধরেন বিশিষ্ট নাগরিকেরা। ‘বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজ’–এর ব্যানারে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
লিখিত বক্তব্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ছাত্র–জনতাকে হত্যা, জুলুম ও নির্যাতনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। একই সঙ্গে এমন গুমোট ও সংকটময় পরিস্থিতিতে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ এবং সামগ্রিকভাবে শিক্ষাঙ্গনকে নিরাপদ ও শিক্ষামুখী রাখতে ১১ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে পুলিশ, র্যাবসহ সরকারি বাহিনী এবং সরকারি মদদপুষ্ট অস্ত্রধারীদের গুলি ও নির্মম আঘাতে প্রতিটি মৃত্যুর সঠিক, স্বচ্ছ তদন্ত করা এবং প্রকৃত দোষী যত উচ্চ পদাধিকারী বা যে দলমতের হোক না কেন, তার সর্বোচ্চ আইনানুগ শাস্তি নিশ্চিত করা।
এসময় টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, মানবাধিকারকর্মী শিরীন হক, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন ও আসিফ নজরুল। আরও ছিলেন বেসরকারি সংস্থা এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা উপস্থিত ছিলেন।
বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজের ১১ দফা দাবি:
১. কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশ, র্যাব, আনসার, বিজিবি, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ সরকারি মদদপুষ্ট অস্ত্রধারীদের গুলি এবং নির্মম আঘাতে নিহত সকল মৃত্যুর সঠিক, স্বচ্ছ তদন্ত হতে হবে এবং প্রকৃত দোষী, তা সে যতই উচ্চ পদাধিকারী বা কোন দলমতের হোক, সর্বোচ্চ আইনানুগ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
২. স্বাধীন, গ্রহণযোগ্য এবং বস্তুনিষ্ঠতার স্বার্থে প্রতিটি হতাহতের এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অস্ত্রের ব্যবহার ও বল প্রয়োগের বিষয়ে জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে তদন্ত হতে হবে। এই প্রক্রিয়া দ্রুততম সময়ের মধ্যে শুরু করতে হবে।
৩. ইতোমধ্যে সংগৃহীত ছবি, ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে চিহ্নিত সকল হন্তারক ও আক্রমণকারীকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। এই ব্যাপারে কালবিলম্বের কোনও সুযোগ নেই।
৪. জাতির ইতিহাসে সংঘটিত এমন নজিরবিহীন হতাহতের শিকার সকল নিহত, আহত নাগরিকের পূর্ণাঙ্গ তালিকা সরকারকে অবিলম্বে প্রকাশ করতে হবে।
৫. ১৪৭ জন নয়, সকল নিহত ও আহত নাগরিকের সম্মানে জাতির সহানুভূতি, সম্মান আর শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযথ মর্যাদায় শোক ঘোষণা করতে হবে। এই শোক প্রকাশকে আক্রমণকারীদের গ্রেপ্তারের দৃশ্যমান প্রক্রিয়া শুরু করে আন্তরিক ও অর্থবহ করতে হবে।
৬. দায় মেনে নিয়ে প্রত্যেক নিহতের পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে। আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে। কেবল প্রতিশ্রুতি নয়, ক্ষতিপূরণ আর পুনর্বাসনের পুরো পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের চিত্র জাতির সামনে অনতিবিলম্বে তুলে ধরতে হবে।
৭. অবিলম্বে আটককৃত সকল শিক্ষার্থীর মুক্তি দিতে হবে এবং শিক্ষার্থী গ্রেপ্তারের চলমান প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে এবং সেখানে অস্ত্রধারী ও প্রভাব বিস্তারের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে।
৮. তথাকথিত ডিবি হেফাজত থেকে সকল সমন্বয়কারী মুক্তি দিতে হবে। এমন জোরপূর্বক উঠিয়ে নেওয়া আর বেআইনি হেফাজতের ব্যাখ্যা দিতে হবে এবং এর সাথে জড়িত সকলকে জবাবদিহিতার মুখোমুখি করতে হবে।
৯. সরকারকে ভয় দেখানোর সংস্কৃতি থেকে সরে আসতে হবে। গুলি করে আন্দোলন দমনের অসুস্থ মানসিকতার অবসান এখনি করতে হবে। স্বাভাবিক ও স্বস্তির পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। কারফিউ ও সেনা প্রত্যাহার করতে হবে, সাঁজোয়া যান সরিয়ে নিতে হবে, হেলিকপ্টারের পাহারা থামাতে হবে, ব্লক রেইড, গণগ্রেফতার, ছাত্র-অভিভাবক হয়রানি বন্ধ করতে হবে। আমরা স্বাধীন দেশে মুক্ত পরিবেশে বসবাস করবো, কোন বদ্ধ, নিয়ন্ত্রিত, আতঙ্কের পরিবেশে নয়।
১০. অবাধ তথ্য প্রবাহে আরোপিত সকল বাধা দূর করতে হবে। ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পূর্ণ মাত্রায় খুলে দিতে হবে।
১১. সহিংসতা দমনের নামে বিরোধী মত দমন করা যাবে না। স্পষ্ট প্রমাণের মাধ্যমে সহিংসতার প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
মন্তব্য করুন: