স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২০০৯ সালে প্রণীত তথ্য অধিকার আইন বাংলাদেশের নাগরিকদের তথ্য পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিলেও, ১৫ বছর পেরিয়ে গেলেও এই অধিকার কাগজে-কলমে রয়ে গেছে। বাস্তব জীবনে তথ্য পাওয়ার প্রক্রিয়া এতটাই জটিল ও ধীরগতির যে সাধারণ মানুষ তো বটেই, সাংবাদিকরাও তাদের কাঙ্ক্ষিত তথ্য পাওয়ার জন্য লড়াই করে যাচ্ছেন। আইনটির প্রয়োগে প্রশাসনিক বাধা এবং রাজনৈতিক প্রভাব এ অধিকারকে কার্যকর করতে বাধা সৃষ্টি করছে, যা আমাদের বর্তমান বাস্তবতায় অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
২০০৯ সালে নাগরিকদের তথ্যের অধিকার নিশ্চিত করতে প্রণীত হয় তথ্য অধিকার আইন। কিন্তু এই আইনের ১৫ বছর পেরিয়ে গেলেও, দেশে তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা ও বাধার শেষ নেই।
সাভার-মানিকগঞ্জ অঞ্চলের প্রবীণ সাংবাদিক অরুপ রায়ের অভিজ্ঞতাই এর জ্বলন্ত উদাহরণ। তিনি ৫৬০টি আবেদন করেছেন তথ্য পাওয়ার জন্য, যার মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশ তথ্য তিনি সহজে পেয়েছেন। ২০২৩ সালে ভ্যাট সম্পর্কিত একটি তথ্যের জন্য তিনি সাভার কাস্টমস অফিসে আবেদন করেন, কিন্তু দীর্ঘ প্রক্রিয়া পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও তিনি কাঙ্ক্ষিত তথ্য পাননি।
তথ্য অধিকার আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলোর একটি হলো, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দায়সারা মনোভাব এবং তথ্য কমিশনের যথাযথ পদক্ষেপের অভাব। অরুপ রায়ের মতো অভিজ্ঞ সাংবাদিকরাও বারবার অভিযোগ দিচ্ছেন, কিন্তু সঠিক তথ্য পেতে আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে আটকে থাকতে হচ্ছে।
তথ্য অধিকার আইন কার্যকর করতে হলে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত একটি তথ্য কমিশন গঠন জরুরি। বিশেষজ্ঞদের মতে, আইনটি প্রচারে এবং জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধিতে ব্যর্থতার কারণেই সাধারণ মানুষ তথ্য পাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এ প্রসঙ্গে ১৩ দফা সুপারিশ করেছে।
সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে— তথ্য অধিকার আইন কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা, সকল আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক বাধা বিলুপ্ত করা, তথ্য কমিশনের ব্যাপক সংস্কার এবং তথ্য অধিকার আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক আইন সংশোধন ও বাতিল করা ইত্যাদি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান টিবিএসকে বলেন, তরুণদের অসামান্য আত্মত্যাগ এবং স্বৈরাচারী শাসনের পতনের কারণে একটি নতুন বাংলাদেশ পুনর্গঠনের আশাবাদ আবারও জেগে উঠেছে।
তিনি বলেন, "বাকস্বাধীনতা, ভিন্নমতের অধিকার এবং তথ্যের অবাধ প্রবাহ এই লক্ষ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ। স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক এবং দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের জন্য তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে।"
বাংলাদেশের এই নতুন যুগে বাকস্বাধীনতা ও তথ্যের অধিকারকে অপরিহার্য হিসেবে অগ্রাধিকার দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান টিআইবি নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।
অপরদিকে, বাংলাদেশ তথ্য কমিশন দেশীয় প্রেক্ষাপটে ‘তথ্য জানার অধিকার দিবস-২০২৪’ এর স্লোগানের শিরোনাম দিয়েছে ‘কর্তৃপক্ষের সকল দ্বার, খুলে দেবে তথ্য অধিকার’।
এদিকে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ‘আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস-২০২৪’ উপলক্ষে শুক্রবার বাণী প্রদান করেছেন। বাণীতে তিনি সমাজ ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর জনগণের ক্ষমতায়ন সুদৃঢ় করতে সঠিক তথ্য প্রদানের ক্ষেত্রে বিদ্যমান সকল বাধা দূর করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) তথ্য কমিশনকে ঢেলে সাজানো ও বিদ্যমান তথ্য অধিকার আইনের সংশোধনের আহ্বান জানিয়েছে।
আন্তর্জাতিক তথ্য জানার অধিকার দিবস ২০২৪ উপলক্ষ্যে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি বাক স্বাধীনতা ও তথ্যের অবাধ অভিগম্যতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে স্বপ্নের ‘নতুন বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে অপরিহার্য হিসেবে গণ্য করে তথ্য কমিশনকে দলীয়করণের সংস্কৃতি থেকে রক্ষা করে এর আমূল সংস্কার এবং সার্বজনীন তথ্য অধিকার, প্রবেশগম্যতা ও জন-অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে তথ্য অধিকার আইনের যুগোপযোগী সংশোধনসহ ১৩ দফা সুপারিশ উত্থাপন করেছে।
২০০৯ সালে প্রণীত তথ্য অধিকার আইন বাংলাদেশের নাগরিকদের তথ্য পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিলেও, ১৫ বছর পেরিয়ে গেলেও এই অধিকার কাগজে-কলমে রয়ে গেছে। বাস্তব জীবনে তথ্য পাওয়ার প্রক্রিয়া এতটাই জটিল ও ধীরগতির যে সাধারণ মানুষ তো বটেই, সাংবাদিকরাও তাদের কাঙ্ক্ষিত তথ্য পাওয়ার জন্য লড়াই করে যাচ্ছেন। আইনটির প্রয়োগে প্রশাসনিক বাধা এবং রাজনৈতিক প্রভাব এ অধিকারকে কার্যকর করতে বাধা সৃষ্টি করছে, যা আমাদের বর্তমান বাস্তবতায় অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
২০০৯ সালে নাগরিকদের তথ্যের অধিকার নিশ্চিত করতে প্রণীত হয় তথ্য অধিকার আইন। কিন্তু এই আইনের ১৫ বছর পেরিয়ে গেলেও, দেশে তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা ও বাধার শেষ নেই।
সাভার-মানিকগঞ্জ অঞ্চলের প্রবীণ সাংবাদিক অরুপ রায়ের অভিজ্ঞতাই এর জ্বলন্ত উদাহরণ। তিনি ৫৬০টি আবেদন করেছেন তথ্য পাওয়ার জন্য, যার মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশ তথ্য তিনি সহজে পেয়েছেন। ২০২৩ সালে ভ্যাট সম্পর্কিত একটি তথ্যের জন্য তিনি সাভার কাস্টমস অফিসে আবেদন করেন, কিন্তু দীর্ঘ প্রক্রিয়া পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও তিনি কাঙ্ক্ষিত তথ্য পাননি।
তথ্য অধিকার আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলোর একটি হলো, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দায়সারা মনোভাব এবং তথ্য কমিশনের যথাযথ পদক্ষেপের অভাব। অরুপ রায়ের মতো অভিজ্ঞ সাংবাদিকরাও বারবার অভিযোগ দিচ্ছেন, কিন্তু সঠিক তথ্য পেতে আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে আটকে থাকতে হচ্ছে।
তথ্য অধিকার আইন কার্যকর করতে হলে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত একটি তথ্য কমিশন গঠন জরুরি। বিশেষজ্ঞদের মতে, আইনটি প্রচারে এবং জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধিতে ব্যর্থতার কারণেই সাধারণ মানুষ তথ্য পাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এ প্রসঙ্গে ১৩ দফা সুপারিশ করেছে।
সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে— তথ্য অধিকার আইন কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা, সকল আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক বাধা বিলুপ্ত করা, তথ্য কমিশনের ব্যাপক সংস্কার এবং তথ্য অধিকার আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক আইন সংশোধন ও বাতিল করা ইত্যাদি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান টিবিএসকে বলেন, তরুণদের অসামান্য আত্মত্যাগ এবং স্বৈরাচারী শাসনের পতনের কারণে একটি নতুন বাংলাদেশ পুনর্গঠনের আশাবাদ আবারও জেগে উঠেছে।
তিনি বলেন, "বাকস্বাধীনতা, ভিন্নমতের অধিকার এবং তথ্যের অবাধ প্রবাহ এই লক্ষ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ। স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক এবং দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের জন্য তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে।"
বাংলাদেশের এই নতুন যুগে বাকস্বাধীনতা ও তথ্যের অধিকারকে অপরিহার্য হিসেবে অগ্রাধিকার দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান টিআইবি নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।
আজ তথ্য অধিকার দিবস ২০২৪
আজ ২৮ সেপ্টেম্বর, আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস-২০২৪। বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে এ দিবসটি পালিত হবে। দিবসটির এ বছরের নির্ধারিত প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘রাষ্ট্রের মূলধারায় তথ্য অধিকারের সংযুক্তি এবং সরকারি খাতের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ’।অপরদিকে, বাংলাদেশ তথ্য কমিশন দেশীয় প্রেক্ষাপটে ‘তথ্য জানার অধিকার দিবস-২০২৪’ এর স্লোগানের শিরোনাম দিয়েছে ‘কর্তৃপক্ষের সকল দ্বার, খুলে দেবে তথ্য অধিকার’।
এদিকে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ‘আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস-২০২৪’ উপলক্ষে শুক্রবার বাণী প্রদান করেছেন। বাণীতে তিনি সমাজ ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর জনগণের ক্ষমতায়ন সুদৃঢ় করতে সঠিক তথ্য প্রদানের ক্ষেত্রে বিদ্যমান সকল বাধা দূর করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) তথ্য কমিশনকে ঢেলে সাজানো ও বিদ্যমান তথ্য অধিকার আইনের সংশোধনের আহ্বান জানিয়েছে।
আন্তর্জাতিক তথ্য জানার অধিকার দিবস ২০২৪ উপলক্ষ্যে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি বাক স্বাধীনতা ও তথ্যের অবাধ অভিগম্যতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে স্বপ্নের ‘নতুন বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে অপরিহার্য হিসেবে গণ্য করে তথ্য কমিশনকে দলীয়করণের সংস্কৃতি থেকে রক্ষা করে এর আমূল সংস্কার এবং সার্বজনীন তথ্য অধিকার, প্রবেশগম্যতা ও জন-অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে তথ্য অধিকার আইনের যুগোপযোগী সংশোধনসহ ১৩ দফা সুপারিশ উত্থাপন করেছে।
মন্তব্য করুন: