
করেসপন্ডেন্ট, গাজীপুর
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের (গাসিক) সাময়িক বরখাস্ত মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলমের কালো টাকার বিষয়টি আবার নতুন করে সামনে এসেছে। এ সিটির আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নগরবাসীর মাঝে আলোচনার তুঙ্গে রয়েছে জাহাঙ্গীরের কালো টাকা। গত গাসিক নির্বাচনে খোদ জাহাঙ্গীরের হলফনামায় উল্লিখিত কালো টাকার অংক এখন ভাইরাল নেট দুনিয়ায়।
গত গাসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলমের বার্ষিক আয়ের অর্ধেকেরও বেশি ছিল কালো টাকা। নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দেওয়া মো. জাহাঙ্গীর আলমের হলফনামা থেকে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
ওই হলফনামার হিসাব অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ করবর্ষে মো. জাহাঙ্গীরের বাৎসরিক আয় ২ কোটি ১৬ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। এর মধ্যে কৃষি খাত থেকে আয় হয় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট/দোকান বা অন্যান্য ভাড়া থেকে ৪ লাখ ৩০ হাজার ও ব্যবসা থেকে আয় হয় ৯৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। হলফনামায় অন্যান্য বিভাগে ১৯ (ই) ধারায় বাৎসরিক আয় হিসেবে উল্লেখ করা হয় ১ কোটি ১৬ লাখ ৩৮ হাজার টাকা।
আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর ১৯ (ই) ধারায় কালো টাকা সাদা করা বা বৈধ করার কথা বলা আছে। সেই ধারা অনুযায়ী গত গাসিক নির্বাচনের আগে ১ কোটি ১৬ লাখ টাকা সাদা করেছেন জাহাঙ্গীর আলম।
গত গাসিক নির্বাচনের হলফনামা অনুযায়ী, মো. জাহাঙ্গীরের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে অর্থ ছিল ৭ কোটি ৪৮ লাখ ৯৬ হাজার ২৮ টাকা ৫ পয়সা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ১ লাখ ৫৫ হাজার ৯৭১ টাকা ৯৫ পয়সা, ব্যবসার পুঁজি ৭৫ লাখ ২৩ হাজার ৭৮৭ টাকা। এ ছাড়া দুই প্রতিষ্ঠানে জাহাঙ্গীরের শেয়ার ৪৭ লাখ ৭০ হাজার, সঞ্চয়পত্র ১০ লাখ, দুটি মোটরগাড়ি, ৩৫ তোলা স্বর্ণ, ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় কেনা ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী, ১ লাখ ৫০ হাজার টাকায় কেনা আসবাবপত্র এবং ১ লাখ ৫৫ হাজার ৯৫০ টাকায় কেনা একটি বন্দুক ও একটি পিস্তল ছিল।
স্থাবর সম্পদের মধ্যে জাহাঙ্গীরের ১ হাজার ৪১৫.১৫ শতাংশ কৃষি জমি, ৩৩.৭১২৪ শতাংশ অকৃষি জমি, ৭.৪৩৭৬ শতাংশ দালান/আবাসিক/বাণিজ্যিক সম্পদ ছিল।
এছাড়াও ওই হলফনামায় অনারেবল টেক্সটাইলস কম্পোজিট লিমিটেড ও জেড আলম অ্যাপারেলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে নিজেকে উল্লেখ করেন জাহাঙ্গীর।
ওই অবস্থায় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হয়েছিলেন মো. জাহাঙ্গীর আলম।
সাংবাদিক নেতা রাহিম সরকার বলেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে গতবার শেষমুহূর্তে ভোটের ব্যাস্ততায় জাহাঙ্গীরের কালো টাকার বিষয়টি তেমনভাবে সামনে আসেনি। এবার সেটা হবে না, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশে সকল তথ্যই এখন সকলের জন্য উন্মুক্ত। জনগণ কালো টাকার মালিকদের প্রতিরোধ করবে। আওয়ামী লীগ নিশ্চয়ই কালোটাকার মালিকদের মনোনয়ন দেবেনা। ভোটাররাও কালোটাকার মালিকদের কোনোভাবেই গ্রহণ করবেন না।
গাজীপুর নাগরিক কমিটির সভাপতি জুলীয়াস চৌধুরী বলেন, টাকাকে কালো বলা হয় প্রতীকী অর্থে। কালো টাকা মানে অবৈধভাবে অর্জিত কিংবা অপ্রদর্শিত টাকা। অবৈধভাবে অর্জিত সব টাকাই কালো টাকা। আবার বৈধভাবে উপার্জিত অর্থ যেটা কর দেওয়ার প্রক্রিয়ায় সংযুক্ত হয়নি, সেটাও কালো টাকা। কালো টাকার পাহাড় গড়ে তোলে আসলে দুষ্কৃতকারী, কালোবাজারি, কর ফাঁকিবাজ ও আন্ডারগ্রাউন্ডের দুষ্ট লোকজন।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গোপনে ধারণ করা তৎকালীন মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। তাতে জাহাঙ্গীরকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও গাজীপুর জেলার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করতে শোনা যায়। এরপর কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। তবে নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় ওই বছরের ১৯ নভেম্বর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভায় মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়, একইসাথে দলে তার প্রাথমিক সদস্যপদও বাতিল করা হয়। ২৫ নভেম্বর জাহাঙ্গীর আলমকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
গত ১৭ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির বৈঠকে দলের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ড ও স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে বহিষ্কার হওয়া নেতাদের আবেদনের ভিত্তিতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত হয়। ওই সভার আগে যারা দোষ স্বীকার করে আবেদন করেছিলেন, তাদের ক্ষমা ঘোষণা করা হয়েছিল। এতে শর্ত সাপেক্ষে ক্ষমা পান জাহাঙ্গীর আলম।
ক্ষমা ঘোষণা সংক্রান্ত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সই করা চিঠিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগের স্বার্থ, আদর্শ, শৃঙ্খলা, তথা গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র পরিপন্থী সম্পৃক্ততার জন্য ইতোপূর্বে জাহাঙ্গীর আলমকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার/অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ স্বীকার করে তিনি ভবিষ্যতে এই ধরনের কর্মকাণ্ডে যুক্ত না হওয়ার বিষয়ে লিখিত অঙ্গীকার করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সিদ্ধান্ত অনুসারে তাকে ক্ষমা করা হয়। তবে ভবিষ্যতে এ ধরনের সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হলে তা ক্ষমার অযোগ্য বিবেচিত হবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের অভ্যন্তরীণ তদন্ত প্রতিবেদন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত অনুসারে জাহাঙ্গীরের বিভিন্ন দুর্নীতি-অপকর্মের ফিরিস্তি তথ্য-প্রমানসহ বিভিন্ন প্রতিবেদন গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রকাশিত হয়। এ প্রসঙ্গে রাহিম সরকারের একটি রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ওঠা ওইসব দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান ছয় মাসের মধ্যে শেষ করার জন্য নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে, অনুসন্ধান শেষে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন আদালত।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের (গাসিক) সাময়িক বরখাস্ত মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলমের কালো টাকার বিষয়টি আবার নতুন করে সামনে এসেছে। এ সিটির আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নগরবাসীর মাঝে আলোচনার তুঙ্গে রয়েছে জাহাঙ্গীরের কালো টাকা। গত গাসিক নির্বাচনে খোদ জাহাঙ্গীরের হলফনামায় উল্লিখিত কালো টাকার অংক এখন ভাইরাল নেট দুনিয়ায়।
গত গাসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলমের বার্ষিক আয়ের অর্ধেকেরও বেশি ছিল কালো টাকা। নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দেওয়া মো. জাহাঙ্গীর আলমের হলফনামা থেকে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
ওই হলফনামার হিসাব অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ করবর্ষে মো. জাহাঙ্গীরের বাৎসরিক আয় ২ কোটি ১৬ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। এর মধ্যে কৃষি খাত থেকে আয় হয় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট/দোকান বা অন্যান্য ভাড়া থেকে ৪ লাখ ৩০ হাজার ও ব্যবসা থেকে আয় হয় ৯৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। হলফনামায় অন্যান্য বিভাগে ১৯ (ই) ধারায় বাৎসরিক আয় হিসেবে উল্লেখ করা হয় ১ কোটি ১৬ লাখ ৩৮ হাজার টাকা।
আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর ১৯ (ই) ধারায় কালো টাকা সাদা করা বা বৈধ করার কথা বলা আছে। সেই ধারা অনুযায়ী গত গাসিক নির্বাচনের আগে ১ কোটি ১৬ লাখ টাকা সাদা করেছেন জাহাঙ্গীর আলম।
গত গাসিক নির্বাচনের হলফনামা অনুযায়ী, মো. জাহাঙ্গীরের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে অর্থ ছিল ৭ কোটি ৪৮ লাখ ৯৬ হাজার ২৮ টাকা ৫ পয়সা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ১ লাখ ৫৫ হাজার ৯৭১ টাকা ৯৫ পয়সা, ব্যবসার পুঁজি ৭৫ লাখ ২৩ হাজার ৭৮৭ টাকা। এ ছাড়া দুই প্রতিষ্ঠানে জাহাঙ্গীরের শেয়ার ৪৭ লাখ ৭০ হাজার, সঞ্চয়পত্র ১০ লাখ, দুটি মোটরগাড়ি, ৩৫ তোলা স্বর্ণ, ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় কেনা ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী, ১ লাখ ৫০ হাজার টাকায় কেনা আসবাবপত্র এবং ১ লাখ ৫৫ হাজার ৯৫০ টাকায় কেনা একটি বন্দুক ও একটি পিস্তল ছিল।
স্থাবর সম্পদের মধ্যে জাহাঙ্গীরের ১ হাজার ৪১৫.১৫ শতাংশ কৃষি জমি, ৩৩.৭১২৪ শতাংশ অকৃষি জমি, ৭.৪৩৭৬ শতাংশ দালান/আবাসিক/বাণিজ্যিক সম্পদ ছিল।
এছাড়াও ওই হলফনামায় অনারেবল টেক্সটাইলস কম্পোজিট লিমিটেড ও জেড আলম অ্যাপারেলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে নিজেকে উল্লেখ করেন জাহাঙ্গীর।
ওই অবস্থায় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হয়েছিলেন মো. জাহাঙ্গীর আলম।
সাংবাদিক নেতা রাহিম সরকার বলেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে গতবার শেষমুহূর্তে ভোটের ব্যাস্ততায় জাহাঙ্গীরের কালো টাকার বিষয়টি তেমনভাবে সামনে আসেনি। এবার সেটা হবে না, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশে সকল তথ্যই এখন সকলের জন্য উন্মুক্ত। জনগণ কালো টাকার মালিকদের প্রতিরোধ করবে। আওয়ামী লীগ নিশ্চয়ই কালোটাকার মালিকদের মনোনয়ন দেবেনা। ভোটাররাও কালোটাকার মালিকদের কোনোভাবেই গ্রহণ করবেন না।
কালো টাকা কী ও কেন?
আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ সালের ১৯ (ই) ধারা অনুযায়ী, বাংলাদেশের কোনো নাগরিক তার গোপনকৃত অর্থ (কালো টাকা) সাদা করতে চাইলে অবশ্যই আয়কর দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে তাকে (আড়াই লাখের উপর, ৪ লাখ পর্যন্ত) টাকার জন্য কর পরিশোধ করতে হবে ১০ শতাংশ। চার লাখের বেশি হলে ১৫ শতাংশ। এর চেয়ে বেশি হলে কর অধ্যাদেশের শর্ত অনুযায়ী কর পরিশোধ করতে হবে। বার্ষিক হিসাব দেওয়ার পর যদি কোনো নাগরিকের কালো টাকার সন্ধান মেলে, তাহলে আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে এবং তাকে দেউলিয়া (ডিফল্ডার) হিসেবে ঘোষণা করা হবে।গাজীপুর নাগরিক কমিটির সভাপতি জুলীয়াস চৌধুরী বলেন, টাকাকে কালো বলা হয় প্রতীকী অর্থে। কালো টাকা মানে অবৈধভাবে অর্জিত কিংবা অপ্রদর্শিত টাকা। অবৈধভাবে অর্জিত সব টাকাই কালো টাকা। আবার বৈধভাবে উপার্জিত অর্থ যেটা কর দেওয়ার প্রক্রিয়ায় সংযুক্ত হয়নি, সেটাও কালো টাকা। কালো টাকার পাহাড় গড়ে তোলে আসলে দুষ্কৃতকারী, কালোবাজারি, কর ফাঁকিবাজ ও আন্ডারগ্রাউন্ডের দুষ্ট লোকজন।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গোপনে ধারণ করা তৎকালীন মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। তাতে জাহাঙ্গীরকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও গাজীপুর জেলার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করতে শোনা যায়। এরপর কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। তবে নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় ওই বছরের ১৯ নভেম্বর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভায় মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়, একইসাথে দলে তার প্রাথমিক সদস্যপদও বাতিল করা হয়। ২৫ নভেম্বর জাহাঙ্গীর আলমকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
গত ১৭ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির বৈঠকে দলের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ড ও স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে বহিষ্কার হওয়া নেতাদের আবেদনের ভিত্তিতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত হয়। ওই সভার আগে যারা দোষ স্বীকার করে আবেদন করেছিলেন, তাদের ক্ষমা ঘোষণা করা হয়েছিল। এতে শর্ত সাপেক্ষে ক্ষমা পান জাহাঙ্গীর আলম।
ক্ষমা ঘোষণা সংক্রান্ত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সই করা চিঠিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগের স্বার্থ, আদর্শ, শৃঙ্খলা, তথা গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র পরিপন্থী সম্পৃক্ততার জন্য ইতোপূর্বে জাহাঙ্গীর আলমকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার/অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ স্বীকার করে তিনি ভবিষ্যতে এই ধরনের কর্মকাণ্ডে যুক্ত না হওয়ার বিষয়ে লিখিত অঙ্গীকার করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সিদ্ধান্ত অনুসারে তাকে ক্ষমা করা হয়। তবে ভবিষ্যতে এ ধরনের সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হলে তা ক্ষমার অযোগ্য বিবেচিত হবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের অভ্যন্তরীণ তদন্ত প্রতিবেদন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত অনুসারে জাহাঙ্গীরের বিভিন্ন দুর্নীতি-অপকর্মের ফিরিস্তি তথ্য-প্রমানসহ বিভিন্ন প্রতিবেদন গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রকাশিত হয়। এ প্রসঙ্গে রাহিম সরকারের একটি রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ওঠা ওইসব দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান ছয় মাসের মধ্যে শেষ করার জন্য নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে, অনুসন্ধান শেষে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন আদালত।
মন্তব্য করুন: