করেসপন্ডেন্ট, গাজীপুর
সাময়িক বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের আরো অর্থ লোপাটের প্রমাণ পেয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি। সোনালী ব্যাংকের গাজীপুর কোর্ট বিল্ডিং শাখার একটি একাউন্ট থেকে ৫ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা নয়-ছয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি। গত শনিবার গাজীপুর নগর ভবনে দিনভর তাঁরা বিভিন্ন নথিপত্র যাচাই, তথ্য সংগ্রহ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
এ অবস্থায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনা ভাইরাস সরঞ্জাম ক্রয়ের নামে গত ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ৫ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা নয়ছয় করে লোপাটের চঞ্চল্যকর ঘটনা। সোনালী ব্যাংক গাজীপুর কোর্ট বিল্ডিং শাখার একটি একাউন্ট থেকে পৃথক ৮টি চেকেরে মাধ্যমে এ টাকা উত্তোলন করা হয়। যার মধ্যে ৭টি চেক ইস্যু করা হয় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৩৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের নামে। তৎকালীন মেয়র মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের নামের সাথে ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের নামের মিল রয়েছে। এ কারণে ওই ৭টি চেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের নামে ইস্যু করা হয় বলে ধারণা পাওয়া যায়। ৫ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার মধ্যে মাত্র ২০ লক্ষ টাকার একটি চেক ইস্যু করা হয় জনৈক ডাঃ মোঃ রহমত উল্লাহর নামে। ৮টি চেকের মধ্যে ৩টিতে চেক গ্রহণকারীর স্বাক্ষরই নাই।
২০২০ সালের ২৫ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সময়ের মধ্যে করোনা প্রতিরোধের সরঞ্জাম ক্রয়ের জন্য অগ্রীম বাবদ ওই ৫ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার ৮টি চেক ইস্যু করা হয়। অথচ বাংলাদেশে কোভিট-১৯ এর জন্য ২০২০ সালের ১৮ মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমুহ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর ২৬ মার্চ থেকে ৬৬ দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। অথচ এর একদিন আগে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের রক্ষায় সরঞ্জাম ক্রয় বাবদ অগ্রীম ৮৯ লক্ষ টাকার চেক ইস্যু করা হয়।
অনুসন্ধান ও প্রাপ্ত তথ্য খতিয়ে দেখা যায়, এ ক্ষেত্রে ক্রয় কমিটি গঠনে সঠিক নিয়ম মেনে করা হয় নাই। নিয়ম অনুযায়ী পাঁচ হাজার টাকার বেশি হলে একাউন্ট পে চেকের মাধ্যমে পরিশোধের নিয়ম থাকলেও এক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। ব্যক্তির নামে এবং একই ব্যক্তির নামে একাধিকবার একাউন্ট পে ছাড়া বিপুল টাকার চেক অগ্রীম দেওয়া হয়। চেকগুলির মধ্যে ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ জাহাঙ্গীর আলম নিজে ৫০ লক্ষ টাকা এবং অবশিষ্ট টাকা মাষ্টার রোলে নিয়োজিত কর্মচারী তসলিম, জুবায়ের ও রনির নাম এবং মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে তুলে নেওয়া হয়।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা যায়, ওই টাকা সমন্বয়ের লক্ষ্যে বিল ভাউচার সঠিকভাবে জমা দেওয়া হয় নাই। তাছাড়া গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নিজস্ব অর্থ ও সরকারি বরাদ্দ দিয়ে করোনা প্রাদুর্ভাবের জন্য প্রতিষেধক ও খাদ্য সামগ্রী ক্রয় করে মেয়র জাহাঙ্গীর আলম নিজের নামের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে তা বিতরণ করেন।
এ অবস্থায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনা ভাইরাস সরঞ্জাম ক্রয়ের নামে গত ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ৫ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা নয়ছয় করে লোপাটের চঞ্চল্যকর ঘটনা। সোনালী ব্যাংক গাজীপুর কোর্ট বিল্ডিং শাখার একটি একাউন্ট থেকে পৃথক ৮টি চেকেরে মাধ্যমে এ টাকা উত্তোলন করা হয়। যার মধ্যে ৭টি চেক ইস্যু করা হয় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৩৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের নামে। তৎকালীন মেয়র মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের নামের সাথে ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের নামের মিল রয়েছে। এ কারণে ওই ৭টি চেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের নামে ইস্যু করা হয় বলে ধারণা পাওয়া যায়। ৫ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার মধ্যে মাত্র ২০ লক্ষ টাকার একটি চেক ইস্যু করা হয় জনৈক ডাঃ মোঃ রহমত উল্লাহর নামে। ৮টি চেকের মধ্যে ৩টিতে চেক গ্রহণকারীর স্বাক্ষরই নাই।
২০২০ সালের ২৫ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সময়ের মধ্যে করোনা প্রতিরোধের সরঞ্জাম ক্রয়ের জন্য অগ্রীম বাবদ ওই ৫ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার ৮টি চেক ইস্যু করা হয়। অথচ বাংলাদেশে কোভিট-১৯ এর জন্য ২০২০ সালের ১৮ মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমুহ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর ২৬ মার্চ থেকে ৬৬ দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। অথচ এর একদিন আগে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের রক্ষায় সরঞ্জাম ক্রয় বাবদ অগ্রীম ৮৯ লক্ষ টাকার চেক ইস্যু করা হয়।
অনুসন্ধান ও প্রাপ্ত তথ্য খতিয়ে দেখা যায়, এ ক্ষেত্রে ক্রয় কমিটি গঠনে সঠিক নিয়ম মেনে করা হয় নাই। নিয়ম অনুযায়ী পাঁচ হাজার টাকার বেশি হলে একাউন্ট পে চেকের মাধ্যমে পরিশোধের নিয়ম থাকলেও এক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। ব্যক্তির নামে এবং একই ব্যক্তির নামে একাধিকবার একাউন্ট পে ছাড়া বিপুল টাকার চেক অগ্রীম দেওয়া হয়। চেকগুলির মধ্যে ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ জাহাঙ্গীর আলম নিজে ৫০ লক্ষ টাকা এবং অবশিষ্ট টাকা মাষ্টার রোলে নিয়োজিত কর্মচারী তসলিম, জুবায়ের ও রনির নাম এবং মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে তুলে নেওয়া হয়।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা যায়, ওই টাকা সমন্বয়ের লক্ষ্যে বিল ভাউচার সঠিকভাবে জমা দেওয়া হয় নাই। তাছাড়া গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নিজস্ব অর্থ ও সরকারি বরাদ্দ দিয়ে করোনা প্রাদুর্ভাবের জন্য প্রতিষেধক ও খাদ্য সামগ্রী ক্রয় করে মেয়র জাহাঙ্গীর আলম নিজের নামের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে তা বিতরণ করেন।
টেন্ডারবাজি, অযৌক্তিক লোকবল নিয়োগ করার পাশাপাশি বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে এবং একইকাজ বিভিন্ন প্রকল্পে দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে গত বছরের ২৫ নভেম্বর সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরে অভিযোগ তদন্তের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে। তাঁরা হলেন, তদন্ত কমিটির প্রধান স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (নগর উন্নয়ন অনুবিভাগ) মোস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী, সদস্য- যুগ্ম সচিব অনুপম বড়ুয়া ও উপ-সচিব মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম।
এ কমিটি গত ১০ জানুয়ারি থেকে প্রায় ৭ মাস ধরে এ তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এ সময়ের মধ্যে কমিটির সদস্যরা গাজীপুরে বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শন, ভুক্তভোগী লোকজনের সাথে কথা বলেছেন, তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করে সেগুলো পর্যালোচনা করেছেন। এছাড়া তদন্ত কমিটি একবার সাময়িক বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের শুনানী গ্রহণ করেছেন। তবে তাদের মধ্যে কমিটির সদস্য অনুপম বড়ুয়া বদলিজনিত কারণে গত শনিবার উপস্থিত ছিলেন না।
এদিন সন্ধ্যায় নগর ভবনে তদন্ত কমিটির প্রধান স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (নগর উন্নয়ন অনুবিভাগ) মোস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী জানান, কমিটি দিনভর জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে পাওয়া বিভিন্ন অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট নথিপত্র পর্যালোচনা, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন। এসময় তাদের বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভুয়া দরপত্র, নির্দিষ্ট কোম্পানিকে দর দেওয়ার অনুরোধ সংক্রান্ত (আরএফকিউ) দরপত্রে অনিয়ম, বিভিন্ন পদে অযৌক্তিক লোকবল নিয়োগ, বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে ও একইকাজ বিভিন্ন প্রকল্পে দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ, প্রতিবছর হাটবাজার ইজারার টাকা যথাযথভাবে নির্ধারিত খাতে জমা না করা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অর্থ খরচে অনিয়ম, ভূমি দখল ও ক্ষতিপূরণ ছাড়া রাস্তা প্রশস্তকরণ সংক্রান্ত অভিযোগ, উন্নয়ন খাতের টাকা রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করে ৯৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা কিভাবে কোথায় খরচ করা হয়েছে এরকম ১০টি অভিযোগের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত কাজ করছে।
মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় গত বছরের ২৫ নভেম্বর গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এর আগে ১৯ নভেম্বর জাহাঙ্গীর আলমকে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকেও তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মো. জহিরুল আলম স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সিটি করপোরেশন আইন-২০১৯ এর ধারা ১২ (২) অনুযায়ী সুষ্ঠু তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার স্বার্থে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিধিনিষেধ পরিপন্থী কার্যকলাপ, দুর্নীতি ও ইচ্ছাকৃত অপশাসনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে ভুয়া টেন্ডার, আরএফকিউ, বিভিন্ন পদে অযৌক্তিক লোকবল নিয়োগ, বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে ও একই কাজ বিভিন্ন প্রকল্পে দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতি বছর হাট-বাজার ইজারার অর্থ যথাযথভাবে নির্ধারিত খাতে জমা না রাখাসহ নানাবিধ অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে।
মন্তব্য করুন: